ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিয়া রহমান ও অপরাধবিজ্ঞান (ক্রিমিনোলজি) বিভাগের বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানের বিরুদ্ধে অন্যের গবেষণা নিজেদের নামে চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তদন্ত কমিটি গঠনের পর বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন ধরণের আলোচনা হচ্ছে।
কর্তৃপক্ষের অভিযোগ অনুযায়ী, অভিযুক্ত এই দুই শিক্ষক ‘A New dimension of Colonialism and Pop Culture: A case study of the Cultural Imperialism’ শিরোনামে এক প্রবন্ধ লেখেন যা গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউ’-এর ডিসেম্বর সংখ্যায় প্রকাশিত হয়।
ওই প্রবন্ধের বিরুদ্ধে 'মেধাচুরি'র অভিযোগ আনে ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস। তাদের অভিযোগ, প্রবন্ধের সিংহভাগ নেওয়া হয়েছে প্রখ্যাত দার্শনিক মিশেল ফুকোর প্রবন্ধ ‘The Subject and Power’ থেকে যা ১৯৮২ সালে ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস জার্নালে প্রকাশিত হয়।
এই অভিযোগের পর সামিয়া রহমান দাবী করেছেন, ঐ প্রবন্ধটি লেখা এবং প্রকাশের জন্য উপস্থাপনের সময় তিনি বিদেশে অবস্থান করছিলেন বিধায় এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। প্রবন্ধের সহ-লেখক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজান তাকে না জানিয়েই এই প্রবন্ধটি তৈরী করেছিলেন এবং সেই কারণে এই প্রবন্ধের কোন দায় দায়িত্ব তিনি গ্রহন করবেন না।
আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে- এই দুই শিক্ষকের আরো একটি প্রবন্ধে মেধাচুরির প্রমান মিলেছে!
২০১৩ সালে এই দুই শিক্ষক Journal of Mass Communication & Journalism এ একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেন, যার শিরোনাম ছিল, Role of Mass Media in Setting Agenda and Manufacturing Consent:A Study on Wars to Rise of Radical Group (Hefajat-e-Islam) in Bangladesh। এই প্রবন্ধটিকে সামিয়া রহমান তার নিজের কাজ হিসেবে ব্যক্তিগত ওয়েব সাইটে উল্লেখ করেছেন। এমনকি Journal of Mass Communication & Journalis এর ওয়েব পেজেও এই লেখাটির করসপন্ডেন্ট অথর হিসেবে সামিয়া রহমানের নাম-ঠিকানাই লেখা রয়েছে।
আলোচ্য প্রবন্ধে তারা মোট ১২টি রেফারেন্স ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু প্রবন্ধটি পড়ে দেখা যায় এই ১২টি রেফারেন্সের বাইরে তারা আরো কমপক্ষে আরো সাত (৭) টি লেখা থেকে সরাসরি কিছু অংশ কপি-পেস্ট করেছেন কিন্তু সেগুলোর কোন রেফারেন্স দেন নাই। অর্থাৎ ঐ অংশগুলো অন্যের মেধাচুরি করে লেখা হয়েছে।
প্রবন্ধটির মেথডলজি অংশের প্রথম প্যারাগ্রাফের দ্বিতীয় লাইন থেকে শুরু করে বাকি অংশের পুরোটাই নেয়া হয়েছে ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের স্কুল অব ইনফরমেশনের The Historical Approach to Research থেকে, যার কোন রেফারেন্স লেখকদ্বয় দেন নাই।
প্রবন্ধটির What is public opinion? উপ-শিরোনামের দ্বিতীয় প্যারাগ্রাফের নীচর অংশটি তারা হুবহু এনসাইক্লোপেডিয়া ব্রিটানিকার Public opinion এন্ট্রির প্রথম প্যারাগ্রাফ থেকে নিয়েছেন এবং যথারীতি কোনরূপ রেফারেন্স না দিয়ে।
উপাত্ত সংগ্রহ ও নমূনায়ন অংশে ভিয়েতনাম যুদ্ধের বর্ননা অংশে লেখকদ্বয় মাঝামাঝি দু'টি লাইন নিয়েছেন Soldier's Walk নামে একটি ওয়েব পেজের ভিয়েতনাম যুদ্ধের উপর লেখা The War In VietNam অধ্যায় থেকে।
ঐ একই প্যারাগ্রাফের নীচের অংশটি তারা নিয়েছেন Fallout Wiki এর Vietnam War অংশ থেকে। বলাবাহুল্য এই এক প্যারাগ্রাফ লিখতে তারা দুইটি ভিন্ন লেখা থেকে কয়েকটি করে লাইন সরাসরি লিখলেও যথারীতি সেগুলোর কোন রেফারেন্স দেননি।
২০০১ সালের ৯/১১ এর টুইন টাওয়ারে হামলার উপর লেখা বর্ননার প্রথম লাইনটি বাদে বাকী অংশ হুবহু উনারা তুলে দিয়েছেন BBC NEWS | In Depth এর The four hijacks শিরোনামে লেখা নিবন্ধের প্রথম প্যারাগ্রাফ থেকে।
ইরাক যুদ্ধের অংশের উপর লেখা প্যারাগ্রাফের প্রথম অংশটি উনারা নিয়েছেন Timeline Index ওয়েব পেজের The Iraq War 2003 থেকে।
এই প্যারাগ্রাফের শেষ অংশটি উনারা সরাসরি কপি করেছেন উইকিপিডিয়ার Iraq and weapons of mass destruction এন্ট্রি থেকে। বলাবাহুল্য, কোনটির ক্ষেত্রেই উনারা কোন রেফারেন্স দেন নাই।
এভাবে একটি গবেষণা প্রবন্ধে উৎস উল্লেখ না করে সরাসরি অন্যের লেখাকে কপি-পেস্ট করে ব্যবহার করা খুবই অনৈতিক একটা কাজ। সামিয়া রহমান এবং মাহফুজুল হক মারজান সেই অনৈতিক কাজটিই করেছেন। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, লেখাটি যে জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে সেটির রিভিউয়াররা এই সাত (৭) টি মেধাচুরির ঘটনাকে হয় সনাক্ত করতে চান নাই, অথবা সনাক্ত করতে পারেন নাই।
বর্তমানে যে কোন ক্রিয়েটিভ লেখালেখির ভুল-ত্রুটি সংশোধনের জন্য এবং লেখার মধ্যে অন্য কারো লেখা রেফারেন্সবিহীনভাবে ব্যবহার করার বিষয়টি সনাক্ত করার জন্য বেশ কিছু সফটওয়ার ব্যবহার করা হয়। আমাদের মত ছা-পোষা লেখকরাও ঐসব সফওয়ার ব্যবহার করে নিজেদের লেখাকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখার চেষ্টা করি। যারা বিভিন্ন জার্নালে রিভিউয়ার বা প্রফেশনাল এডিটর হিসেবে কাজ করেন, তারা তো বটেই এমনকি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও এইসব সফটওয়ার ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের এসাইনমেন্ট, টার্মপেপার বা থিসিস যাচাই করে থাকেন। কাজেই Journal of Mass Communication & Journalism এর এডিটর ও রিভিউয়াররা এই সফওয়ারগুলো ব্যবহার করেন না, এটা মেনে নেয়া কঠিন।
আশা করি বাংলাদেশের শিক্ষক-গবেষক এবং এডিটর-রিভিউয়াররা আরেকটু সতর্ক হবেন এবং মেধাচুরি'র মত গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকবেন।
কর্তৃপক্ষের অভিযোগ অনুযায়ী, অভিযুক্ত এই দুই শিক্ষক ‘A New dimension of Colonialism and Pop Culture: A case study of the Cultural Imperialism’ শিরোনামে এক প্রবন্ধ লেখেন যা গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউ’-এর ডিসেম্বর সংখ্যায় প্রকাশিত হয়।
ওই প্রবন্ধের বিরুদ্ধে 'মেধাচুরি'র অভিযোগ আনে ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস। তাদের অভিযোগ, প্রবন্ধের সিংহভাগ নেওয়া হয়েছে প্রখ্যাত দার্শনিক মিশেল ফুকোর প্রবন্ধ ‘The Subject and Power’ থেকে যা ১৯৮২ সালে ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস জার্নালে প্রকাশিত হয়।
এই অভিযোগের পর সামিয়া রহমান দাবী করেছেন, ঐ প্রবন্ধটি লেখা এবং প্রকাশের জন্য উপস্থাপনের সময় তিনি বিদেশে অবস্থান করছিলেন বিধায় এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। প্রবন্ধের সহ-লেখক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজান তাকে না জানিয়েই এই প্রবন্ধটি তৈরী করেছিলেন এবং সেই কারণে এই প্রবন্ধের কোন দায় দায়িত্ব তিনি গ্রহন করবেন না।
আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে- এই দুই শিক্ষকের আরো একটি প্রবন্ধে মেধাচুরির প্রমান মিলেছে!
২০১৩ সালে এই দুই শিক্ষক Journal of Mass Communication & Journalism এ একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেন, যার শিরোনাম ছিল, Role of Mass Media in Setting Agenda and Manufacturing Consent:A Study on Wars to Rise of Radical Group (Hefajat-e-Islam) in Bangladesh। এই প্রবন্ধটিকে সামিয়া রহমান তার নিজের কাজ হিসেবে ব্যক্তিগত ওয়েব সাইটে উল্লেখ করেছেন। এমনকি Journal of Mass Communication & Journalis এর ওয়েব পেজেও এই লেখাটির করসপন্ডেন্ট অথর হিসেবে সামিয়া রহমানের নাম-ঠিকানাই লেখা রয়েছে।
আলোচ্য প্রবন্ধে তারা মোট ১২টি রেফারেন্স ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু প্রবন্ধটি পড়ে দেখা যায় এই ১২টি রেফারেন্সের বাইরে তারা আরো কমপক্ষে আরো সাত (৭) টি লেখা থেকে সরাসরি কিছু অংশ কপি-পেস্ট করেছেন কিন্তু সেগুলোর কোন রেফারেন্স দেন নাই। অর্থাৎ ঐ অংশগুলো অন্যের মেধাচুরি করে লেখা হয়েছে।
প্রবন্ধটির মেথডলজি অংশের প্রথম প্যারাগ্রাফের দ্বিতীয় লাইন থেকে শুরু করে বাকি অংশের পুরোটাই নেয়া হয়েছে ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের স্কুল অব ইনফরমেশনের The Historical Approach to Research থেকে, যার কোন রেফারেন্স লেখকদ্বয় দেন নাই।
প্রবন্ধটির What is public opinion? উপ-শিরোনামের দ্বিতীয় প্যারাগ্রাফের নীচর অংশটি তারা হুবহু এনসাইক্লোপেডিয়া ব্রিটানিকার Public opinion এন্ট্রির প্রথম প্যারাগ্রাফ থেকে নিয়েছেন এবং যথারীতি কোনরূপ রেফারেন্স না দিয়ে।
উপাত্ত সংগ্রহ ও নমূনায়ন অংশে ভিয়েতনাম যুদ্ধের বর্ননা অংশে লেখকদ্বয় মাঝামাঝি দু'টি লাইন নিয়েছেন Soldier's Walk নামে একটি ওয়েব পেজের ভিয়েতনাম যুদ্ধের উপর লেখা The War In VietNam অধ্যায় থেকে।
ঐ একই প্যারাগ্রাফের নীচের অংশটি তারা নিয়েছেন Fallout Wiki এর Vietnam War অংশ থেকে। বলাবাহুল্য এই এক প্যারাগ্রাফ লিখতে তারা দুইটি ভিন্ন লেখা থেকে কয়েকটি করে লাইন সরাসরি লিখলেও যথারীতি সেগুলোর কোন রেফারেন্স দেননি।
২০০১ সালের ৯/১১ এর টুইন টাওয়ারে হামলার উপর লেখা বর্ননার প্রথম লাইনটি বাদে বাকী অংশ হুবহু উনারা তুলে দিয়েছেন BBC NEWS | In Depth এর The four hijacks শিরোনামে লেখা নিবন্ধের প্রথম প্যারাগ্রাফ থেকে।
ইরাক যুদ্ধের অংশের উপর লেখা প্যারাগ্রাফের প্রথম অংশটি উনারা নিয়েছেন Timeline Index ওয়েব পেজের The Iraq War 2003 থেকে।
এই প্যারাগ্রাফের শেষ অংশটি উনারা সরাসরি কপি করেছেন উইকিপিডিয়ার Iraq and weapons of mass destruction এন্ট্রি থেকে। বলাবাহুল্য, কোনটির ক্ষেত্রেই উনারা কোন রেফারেন্স দেন নাই।
এভাবে একটি গবেষণা প্রবন্ধে উৎস উল্লেখ না করে সরাসরি অন্যের লেখাকে কপি-পেস্ট করে ব্যবহার করা খুবই অনৈতিক একটা কাজ। সামিয়া রহমান এবং মাহফুজুল হক মারজান সেই অনৈতিক কাজটিই করেছেন। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, লেখাটি যে জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে সেটির রিভিউয়াররা এই সাত (৭) টি মেধাচুরির ঘটনাকে হয় সনাক্ত করতে চান নাই, অথবা সনাক্ত করতে পারেন নাই।
বর্তমানে যে কোন ক্রিয়েটিভ লেখালেখির ভুল-ত্রুটি সংশোধনের জন্য এবং লেখার মধ্যে অন্য কারো লেখা রেফারেন্সবিহীনভাবে ব্যবহার করার বিষয়টি সনাক্ত করার জন্য বেশ কিছু সফটওয়ার ব্যবহার করা হয়। আমাদের মত ছা-পোষা লেখকরাও ঐসব সফওয়ার ব্যবহার করে নিজেদের লেখাকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখার চেষ্টা করি। যারা বিভিন্ন জার্নালে রিভিউয়ার বা প্রফেশনাল এডিটর হিসেবে কাজ করেন, তারা তো বটেই এমনকি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও এইসব সফটওয়ার ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের এসাইনমেন্ট, টার্মপেপার বা থিসিস যাচাই করে থাকেন। কাজেই Journal of Mass Communication & Journalism এর এডিটর ও রিভিউয়াররা এই সফওয়ারগুলো ব্যবহার করেন না, এটা মেনে নেয়া কঠিন।
আশা করি বাংলাদেশের শিক্ষক-গবেষক এবং এডিটর-রিভিউয়াররা আরেকটু সতর্ক হবেন এবং মেধাচুরি'র মত গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকবেন।
ব্রূনাই থাকতে ইউনিভারসিটি অফ ব্রূনাই দারুসসালাম এ ইংলিশ লিতারেচার পরার তাল করছিলাম। ডিন ভদ্রমহিলা চাইনিজ, অক্সফোর্ড পি এইচ ডী। তিনি আমার সঙ্গে কিছু সময় কথা বললেন। অনেক ক্ষন পরে তিনি বললেন, 'আপনি আপনার ভার্সিটির সময় থেকে অনেক দূরে চলে গেছেন, আপনাকে একটা বই দেই, মিশেল ফূকোর পানিশমেন্ট। ওটা পরে আসেন, শেষ করতে পারলে আমি ধরে নিব, আপনার লিটারেচার চালিয়ে যাওয়ার ধৈর্য আছে।' সপ্তাহ কাল পরে তাকে গিয়ে বললাম, ব্যবসা করতে এসেছি, আপাতত তাই করি। এমন বোরিং বই আমি জিন্দেগীতে পরি নাই। তিনি এখনো আমার ভালো বন্ধু। তিনি ছাত্র চেনেন। আমাদের চোরগণ চুরির সাবজেক্ট চেনেনা। মিশেল ফুকোর নকল! ভালো, ভালো।
ReplyDelete